ফের পতনে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা ৫ ইসলামী ব্যাংক
একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ারের রেকর্ড দরপতনের পর সম্প্রতি কিছুটা দাম বাড়তে দেখা যায়। ছয় কার্যদিবস বাড়ার পর ফের এ পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) লেনদেন শুরুর দরের সঙ্গে তুলনা করলে ব্যাংকগুলোর শেয়ার দাম ৯ শতাংশ থেকে ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম এবং নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ‘ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫’ জারি করে এই ব্যাংকগুলোকে একীভূত করতে বিশেষ বিধান করেছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা কার্যকরে উদ্যোগ নিয়েছে। একীভূত হওয়ার পর এগুলোর মালিকানা যাবে সরকারের কাছে। এ জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয় এসআইবিএলের শেয়ার। এর পর ধারাবাহিকভাবে দাম কমে ২৩ সেপ্টেম্বর ৩ টাকায় নেমে আসে। তবে এরপর দফায় দফায় দাম বেড়ে ৭ অক্টোবর প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে আসে।
এরপর আজ বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ৬ টাকা ১০ পয়সায়। অর্থাৎ লেনদেনের শুরুতেই প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪০ পয়সা বেড়ে যায়। কিন্তু লেনদেনের শেষ পর্যন্ত শেয়ারের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকেনি। উল্টো দরপতন হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ২০ পয়সা। এ হিসাবে লেনদেন শুরুর দামের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
রেকর্ড দরপতনের পর কিছুটা বেড়ে এখন আবার পতনের মধ্যে পড়েছে বাকি চার ব্যাংকও। লেনদেন শুরুর দামের সঙ্গে তুলনা করলে সব থেকে বেশি দরপতন হয়েছে এক্সিম ব্যাংকের। বুধবার ব্যাংকটির শেয়ার ৫ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত ৪ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে যায়। অর্থাৎ ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ দরপতন হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১১ আগস্ট ব্যাংকটির শেয়ার দাম সর্বোচ্চ ১১ টাকায় লেনদেন হয়। কিন্তু দফায় দফায় দরপতন হয়েছে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে। এই রেকর্ড দরপতনের পর গত কয়েক কার্যদিবস টানা দাম বেড়ে মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে। কিন্তু এখন আবার দরপতন হলো।
বাকি তিন ব্যাংকের মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দাম গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ৮ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। এরপর রেকর্ড দরপতনের মধ্যে পড়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ১ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে যায়। অবশ্য এই রেকর্ড দরপতনের পর টানা দাম বেড়ে মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩ টাকা ৩০ পয়সায় উঠে আসে।
কিন্তু বুধবার আবার ব্যাংকটির শেয়ার দামে পতন হলো। এদিন ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ৫ টাকা ৩০ পয়সা করে। তবে দিনের লেনদেন শেষ ৩ টাকা ১০ পয়সায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ লেনদেন শুরুর তুলনায় দাম কমেছে ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর আগের কার্যদিবসের তুলনায় দাম কমেছে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
একীভূতের প্রক্রিয়ায় থাকা আর এক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দাম গত বছরের ১২ আগস্ট ছিল ৮ টাকা ৩০ পয়সা। এখান থেকে রেকর্ড দরপতন হয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে যায়। এই রেকর্ড দরপতনের পর কয়েক কার্যদিবস দাম বেড়ে মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ টাকা ২০ পয়সা হয়।
কিন্তু এখন আবার ব্যাংকটির শেয়ার দামে পতন হলো। বুধবার ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ২ টাকা ৪০ পয়সায়। তবে দিনের লেনদেন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা। এ হিসেবে লেনদেন শুরুর তুলনায় দাম কমেছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার দাম গত বছরের ১২ আগস্ট ছিল ৮ টাকা ২০ পয়সা। এরপর রেকর্ড দরপতন হয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ৪০ পয়সায় নেমে যায়। এই রেকর্ড দরপতনের পর গত কয়েক কার্যদিবস টানা দাম বাড়ায় মঙ্গলবার প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ টাকা ২০ পয়সা উঠে।
কিন্তু এখন আবার দরপতন হলো। বুধবার ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ২ টাকা ২০ পয়সায়। তবে দিনের লেনদেন শেষে ২ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ২০ পয়সা বা ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।